ইংরেজি শেখার সেরা বই

ইংরেজি শেখার সেরা বই

আধুনিক যুগে বৈশ্বিক যোগাযোগ এর মাধ্যম হচ্ছে ইংরেজি। তাই নিজের ক্যারিয়ার এর জন্য এবং আধুনিক যুগ এর সাথে তাল মিলিয়ে চলতে, ইংরেজি ভাষা শেখার কোনো বিকল্প নেই। বাজারে ইংরেজি ভাষা শেখানোর জন্য অনেক বই রয়েছে। আজকের এ লেখাতে ইংরেজি শেখার জন্য সেসবের মধ্যেই জনপ্রিয় ও ভালোমানের বইগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো।

ইংরেজি শেখার সেরা ৫ টি বই

Apex English by Dr. Waliullah

Apex English by Dr. Waliullah

বাংলাদেশী লেখকদের ইংরেজি ভাষা শেখার উপর যত ধরণের বই আছে, তাদের মধ্যে Apex English সবচেয়ে জনপ্রিয় বইগুলোর প্রথম সারিতে থাকবে। তবে এই বইটি একদম নতুন ইংরেজি শিখতে চান তাদের জন্য নয়, বরং যারা ইংরেজি ব্যাকরণের বিভিন্ন প্রয়োগ শিখতে চান তাদের জন্য। এপেক্স ইংলিশ বইটি সাধারনত ছাত্রছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার জন্য এবং চাকরিপ্রার্থীরা চাকরির পরীক্ষার জন্য অধ্যয়ন করে থাকেন। তাই বইটিকে সাজানো হয়েছে টপিক ভিত্তিক আলাদা আলাদা ভাবে যাতে এ ধরণের প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষাগুলোর জন্য সুবিধা হয়৷ তাই আপনি যদি বাংলাদেশী হন এবং ইংরেজি শেখার উদ্দেশ্য হয় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি বা চাকরি লাভ, তাহলে ইংরেজির জন্য অ্যাপেক্স ইংলিশ বইটি আপনার জন্য আদর্শ। এই বইটিতে ইংরেজির গ্রামার এর নিয়ম গুলো যেমন সহজবোধ্য ভাষায় বুঝানো হয়েছে, তেমনি রয়েছে এক বিশাল প্রশ্নব্যাংক যাতে বিগত অন্তত ৩০ বছরের বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন৷ ব্যাকরণের নিয়ম বুঝার পর যদি এই প্রশ্নগুলো সমাধান করেন তাহলে চাকরি বা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় আপনার ইংরেজিতে আর কোনোরকম সমস্যাই হবেনা। বইটি রকমারি সহ বিভিন্ন বুকশপে অনলাইনে পাওয়া যায়, আবার লাইব্রেরীগুলোতেও বইটি সহজলভ্য। বইটির বর্তমান বাজারমূল্য ৪০০ টাকার মতো, তবে তা সময় ও এলাকার উপর ভিত্তি করে সাথে কম বেশি হতে পারে। 

Common Mistakes in English by T J Fitikides

Common Mistakes in English by T J Fitikides

ইংরেজি বাঙালিদের মাতৃভাষা নয়, তাই ইংরেজি সকল বাঙালিকেই আলাদাভাবে অধ্যয়ন করে শিখতে হয়। কিন্তু যেহেতু এটি একটি বিদেশূ ভাষা, এর ব্যাকরণের কিছু বিষয় খুবই কনফিউশান এ ফেলে দেয়, আর অহরহ ভুল হয়ে থাকে যা আমরা নিজ মাতৃভাষা না হওয়ায় বুঝতেও পারিনা। উদাহরণ স্বরূপ, But শব্দের কোনো বাক্যে অর্থ দাঁড়ায় ‘কিন্তু’, আবার কোনো বাক্যে এর অর্থ হলো ‘ব্যতীত’৷ ইংরেজি মাতৃভাষা না হওয়ায়, একই শব্দের একেক ক্ষেত্রে একেক অর্থ হবে, তা অনেকসময় অনুধাবন করতে না পেরে আমরা ভুল বাক্য বলে বসি৷ অফিসে গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ এর সময় এ ধরণের ভুল হলে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হতে পারে। এছাড়া পরীক্ষায় ভুল লিখলে নাম্বার তো কাটা যাবেই। ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করতে গিয়ে অন্যান্য ভাষাভাষী মানুষেরা বানান করতে গিয়ে এবং অন্যান্য যে ধরণের ভুলগুলো সচরাচর করে থাকেন সেসব নিয়েই T J Fitikides এর এই অসাধারন বইটি সাজানো। এটি এর গুনগত মানের জন্য বিশ্বব্যাপী গত কয়েক দশক ধরে তুমুল জনপ্রিয়। এছাড়াও বিভিন্ন পরীক্ষাগুলোতে যাচাই করার জন্য মূলত ইংরেজির এইসব কনফিউজিং জায়গাগুলো থেকেই প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। তাই একাডেমিক ও চাকরি পরীক্ষার্থীদের জন্য ও এই বইটি খুবই সহায়ক। বইটি পেপারব্যাক আকারেই বেশি বিক্রি হয় এবং দাম ও অত্যন্ত কম। ৮০-১৫০ টাকা খরচ করলে নীলক্ষেত বা যেকোনো ভালো লাইব্রেরীতেই এই বইটি পাওয়া যাবে। 

Rapidex English Speaking Course by R.K Gupta

Rapidex English Speaking Course by R.K Gupta

কর্মজীবনে সবচাইতে বেশি প্রয়োজন হয় স্পোকেন ইংলিশ এর। ইন্টারভিউ তে ইংরেজি প্রশ্ন উত্তর করতে, বিদেশী গ্রাহকদের সাথে ডিল করতে কিংবা অফিসের প্রেজেন্টেশন, সবকিছুই হয় ইংলিশে। অনেকেই অনেক ভালো ইংলিশ জানে, কিন্তু ইংরেজিতে কথা ভালোমতো গুছিয়ে বলতে পারে না, আমতা আমতা করে। অথচ কর্মক্ষেত্রে ইংরেজি লেখার চেয়ে ইংরেজিতে কথার দক্ষতাকেই বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়ে থাকে। কর্মজীবনে প্রমোশন পেতে স্পোকেন ইংলিশে দক্ষ হওয়ার কোনো বিকল্প নেই৷ এছাড়াও যারা বিদেশে পড়ালেখার জন্য তাদের ও সেখানের লোকজন এর সাথে মানিয়ে নিতে এবং কথা বলতে স্পোকেন ইংলিশ জরুরি। আর স্পোকেন ইংলিশ এ একদম নবীন থেকে দক্ষ করে তুলার জন্য সেরা একটি বই হচ্ছে Rapidex. ভারতীয় লেখক আর.কে গুপ্ত এর লেখা এই বইটি স্পোকেন ইংলিশ শেখার জন্য সারাবিশ্বব্যাপী সমাদৃত। Rapidex শব্দটির মানে হচ্ছে “খুব দ্রুত এবং নিজে নিজেই” । এই নামটি বইটির সাথে যথার্থভাবে যায় কারন বইটির মাধ্যমে খুব দ্রুত ও সহজে নিজে নিজেই স্পোকেন ইংলিশ এ দক্ষ হয়ে উঠা সম্ভব। বইটিকে এমনভাবে সাজানো হয়েছে যে, মাত্র ৬০ দিনেই আপনি স্পোকেন ইংলিশ এ দক্ষ হয়ে উঠতে পারবেন। বইটি কয়েকটি ধাপে লেখা হয়েছে৷ এছাড়া, বইটিতে রয়েছে নানান ধরনের পরিস্থিতিতে ইংলিশে কিভাবে কথা বলতে হয় তার বর্ননা। যেমন, ঔষধের দোকানে গিয়ে কিভাবে ইংরেজিতে ঔষধ চাইতে হবে, কিভাবে অফিসে বসের সাথে চাকরি সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলতে হবে, এমন বিভিন্ন পরিস্থিতি এবং সেই পরিস্থিতির কিছু কথোপকথন উদাহরণস্বরূপ দেওয়া আছে। পাশাপাশি টিপস দেওয়া আছে যে আপনি আপনার প্রয়োজনে কিভাবে এই উদাহরনের বাক্যগুলোর কিছু অংশ বদলে নিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন। এভাবে ৫০ এর অধিক পরিস্থিতির সাহায্যে আপনাকে স্পোকেন ইংলিশে দক্ষ করে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে বইটিতে। বর্তমানে বাজারে বইটির বাংলা অনুবাদ ও পাওয়া যায়। 

Practical English Usage by Michael Swan

Practical English Usage by Michael Swan

বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় ইংরেজি শেখার বইগুলোর মধ্যে অবশ্যই এই বইটি শীর্ষের দিকে থাকবে৷ বইটির গুণগত মান ও জনপ্রিয়তার প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করা যায় যে, বইটি বিশ্বব্যাপী অফিসিয়াল কপি বিক্রি হয়েছে ২০ লক্ষ কপির ও বেশি। আনঅফিসিয়াল মিলালে তা নিশ্চয়ই আরো কয়েক গুণ বেশি। বইটির এই তুমুল জনপ্রিয়তার কারন বইটির স্বকীয় বৈশিষ্ট্য৷ এতে একজন ব্যক্তি যাতে সহজে ও আনন্দের সাথে ইংরেজি শিখতে পারে তার সম্পূর্ণ ব্যবস্থা রয়েছে৷ বইটিতে দুইটি প্রধান ভাগ আছে। এর একভাগে ব্যাকরণ শিক্ষা আরেকভাবে রয়েছে শব্দার্থ। তবে এই শব্দার্থগুলো সাধারন ডিকশনারির মতো নয়, বরং উদাহরণ ও বাক্যে ব্যবহার উল্লেখ করে বেশ সুন্দরভাবে দেওয়া আছে। এছাড়াও বইটিতে বিভিন্ন কথোপকথন এর মাধ্যমে ইংরেজির অনেক জটিল নিয়মকে সহজে বুঝানো হয়েছে। পাশাপাশি ব্রিটিশ ও আমেরিকান ইংরেজির পার্থক্য, ইংরেজি শিখতে গিয়ে কিছু সাধারন ভুল যা শিক্ষার্থীরা করে থাকে সেসব বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যাতে শিক্ষার্থীরা এ নিয়ে আর ভুল না করে। বইটিতে ২৫০+ শব্দ আলাদাভাবে উল্লেখ করা যাছে, যেসব শব্দের উচ্চারণ বা বানান কাছাকাছি হওয়ায় নতুনরা ব্যবহার করতে ভুল করে বসে। এভাবে বইটিকে ইংরেজির নতুন শিক্ষার্থীদের বানান শেখার জন্য ভালোভাবে সাজানো হয়েছে। বইটির দাম অফিসিয়ালি ৮০০ টাকার মতো, এলাকা ও সময়ভেদে কমবেশি হতে পারে।

Cambridge IELTS English

Cambridge IELTS English

বিশ্বব্যাপী ইংরেজি ভাষা ব্যবহৃত হচ্ছে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে। তাই পড়লেখা বা চাকরির জন্য যখন কেউ বিদেশে এপ্লাই করে, তখন সেই ভার্সিটি বা কোম্পানীটি শিউর হতে চায় যে সে আসলে ইংরেজিতে কিরকম দক্ষ এবং ভিন্নদেশে গিয়ে সকলের সাথে যোগাযোগ করার মতো যথেষ্ঠ ইংরেজি জ্ঞান তার আছে কিনা। এটা যাচাই এর জন্য বিশ্বব্যাপী প্রচলিত একটি পরীক্ষা হচ্ছে IELTS এক্সাম। এই এক্সামে আপনি ইংরেজিতে পড়ার, লেখার, শুনে বুঝতে পারার এবং সাবলীলভাবে বলতে পারার পরীক্ষা হয়ে থাকে। IELTS এ একটি নির্দিষ্ট স্কোর এর নিচে পেলে বিদেশে অধ্যয়নের বা চাকুরির জন্য যাওয়া সম্ভব হয়না, কারন তাতে বুঝায় যে আপনি সেখানে গিয়ে বাকিদের সাথে কথোপকথন এর জন্য প্রস্তুত নন। কেমব্রিজের IELTS এর প্রস্তুতির এর জন্য বেশ কয়েক খন্ড বই রয়েছে। আপনি IELTS এক্সাম যদি নাও দেন, এমনিতে ইংরেজি শেখার জন্য এই বইগুলো খুবই সহায়ক। IELTS এর শেষ কয়েকটি ভার্সনের বই কিনে অধ্যয়ন শুরু করলে খুব দ্রুতই আপনি দক্ষ হয়ে উঠতে পারবেন। বইগুলোতে থাকা লিসেনিং টেস্ট এর অডিওগুলো অনলাইনে সহজলভ্য। এছাড়াও IELTS এর প্রস্তুতির জন্য বিভিন্ন অডিওবুক ও অনলাইনে পাওয়া যায়। এভাবে ইংরেজি লেখা, শোনা, পড়া ও বলার দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে আপনি ইংরেজিতে সহজেই সকলের সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম হবেন। এছাড়া দেশে থাকলেও কর্মজীবন এবং ছাত্রজীবনে এই দক্ষতা আপনার কাজে লাগবে।

শেষকথা

এই যুগে ইংরেজি ভাষা রপ্ত করার কোনো বিকল্প নেই। ইংরেজি ভাষা অধ্যয়নের সেরা কয়েকটি বই নিয়ে আজকে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়েছে। এগুলো ছাড়াও বাজারে আরো অনেক ইংরেজি শেখার বই রয়েছে৷ আবার, যথাযথভাবে ইংরেজি শেখার জন্য একটির বদলে আপনি এখানকার একাধিক বই একসাথে মিলিয়েও পড়তে পারেন। যেমন, কোনো বই স্পোকেন ইংলিশের জন্য ভালো আর কোনো বই ভোকাবুলারির জন্য ভালো৷ তো এই দুই বই মিলিয়ে পড়া যেতে পারে। সর্বোপরি, আজকের এই লেখাটি থেকে ইংরেজি ভাষা শেখার জন্য প্রয়োজনীয় বই এর ব্যাপারে ধারণা পেয়ে উপকৃত হয়েছেন, এমনটাই কামনা করছি।

অনবরত জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী

ইংরেজি শিখতে কতদিন সময় লাগে? 

আপনার মেধা ও পরিশ্রমের উপর নির্ভর করে৷ ইংরেজি একটি ভাষা, তাই এটি কখনোই সম্পূর্ণরূপে অধ্যয়ন করে শেষ করা সম্ভব হবে না। তবে, আপনি যদি নিয়মিত চেষ্টা করেন, কয়েক মাসের মধ্যেই আপনি বেশ ভালো ইংরেজি রপ্ত করতে পারবেন।

ইংরেজি শব্দ মুখস্ত হয়না, কি করবো? 

ইংরেজি যেহেতু আমাদের মাতৃভাষা নয় তাই এটি মুখস্ত করতে বেশ বেগ পেতে হয়। তবে, কিছু কৌশলে সহজেই ইংরেজি শব্দগুলো আত্মঃস্থ করা যেতে পারে। বারবার লিখে লিখে প্রাকটিস করবেন। এছাড়াও শব্দ আর অর্থ মুখস্থ না করে, শব্দগুলো কিরকম বাক্যে ব্যবহৃত হয় সেসব বাক্যে বসিয়ে ব্যবহার করলে তা মনে রাখতে সুবিধা হবে। 

IELTS এর স্কোর কত থাকা দরকার?

IELTS এ সাধারনত ৬ এর উপর স্কোর থাকলেই যথেষ্ঠ ধরা হয়ে থাকে। তবে, বিদেশে স্কলারশিপ পেতে হলে বা অন্যান্য অগ্রাধিকার পেতে চাইলে ৭ এর উপর স্কোর রাখাটা প্রয়োজন। 

বই এর পাশাপাশি ইংরেজি শিখতে আর কি করা যায়? 

বই এর ব্যাকরণের নিয়ম ছাড়া শুদ্ধভাবে ইংরেজি বলা সম্ভব হবেনা। তবে, বই এর পাশাপাশি ইংরেজি মুভি দেখা, ইংরেজি শেখার বাংলা ওয়েবসাইটগুলোতে গিয়ে পড়াশোনা করা, ইংরেজি পত্রিকা পড়া, ইংরেজি বিষয়ক বিভিন্ন কোর্স করা, বন্ধুদের সাথে ইংরেজিতে কথা বলার প্রাকটিস করার মাধ্যমে নিজের ইংরেজি দক্ষতার উন্নতি ঘটানো সম্ভব। 

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *