ইংরেজি বানান শেখার সহজ উপায়

ইংরেজি বানান শেখার সহজ উপায়

ইংরেজি ভাষাকে বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাষা বলা যেতে পারে। আন্তর্জাতিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত এ ভাষা শুদ্ধভাবে শেখা তাই অত্যন্ত জরুরি। অফিসে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ, ব্যবসা বাণিজ্যে ইংরেজি ভাষাতে যোগাযোগ করতে হয়, সেখানে যদি কোনো শব্দের বানানের ভুল হয় তা বেশ বিব্রতকর। তবে বিদেশী ভাষা বিধায় ইংরেজি অনেক শব্দের বানান মনে রাখাটা কষ্টকর, আর সহজে শেখাও যায়না। আজকের এ লেখাতে আমরা ইংরেজি বিভিন্ন বানান কিভাবে সহজে মনে রাখা যায় তার কয়েকটি কৌশল উল্লেখ করবোঃ

ফ্ল্যাশকার্ড

এটি ইংরেজি বানান বা যেকোন পড়া সহজে আত্মঃস্থ করার একটি দারুন কৌশল। কয়েকটি কার্ডে যেসব কঠিন বানান আপনার মুখস্থ করতে কষ্ট হচ্ছে, তা লিখে রাখুন এবং একসাথে করে পকেটে রাখুন। এরপর আপনি যখনই সময় পান, ফ্ল্যাশকার্ড গুলো বের করে একবার করে চোখ বুলিয়ে নিন। এভাবে আপনি গাড়িতে আছেন, লিফটে দাঁড়িয়ে আছেন বা কোথাও অপেক্ষা করছেন, এমন সময় বারবার ফ্ল্যাশকার্ড গুলো বের করে দেখুন ও একবার করে শব্দগুলো চোখ বুলিয়ে নিন। এভাবে বারবার আপনার রিভিশন হবে, আপনার সাবকনশাস মাইন্ডের মাধ্যমে মস্তিষ্ক এই শব্দগুলোকে গ্রহণ করবে। এভাবে কয়েকবার করে দেখার মাধ্যমে আপনার স্মৃতিতে বানানগুলো গেঁথে যাবে এবং আর এই বানানগুলো ভুলবেন না। আপনি যদি এক বসায় জোর করে বানান মুখস্ত করতে চান সেক্ষেত্রে বেশ কষ্ট হবে, আবার সকলের মেধা একরকম না, তবে এই ফ্ল্যাশকার্ড এর মাধ্যমে আপনি বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে ও কষ্ট ছাড়া দীর্ঘস্থায়ী ভাবে ইংরেজি বানান মুখস্ত করতে পারবেন। 

ভেঙে ভেঙে শিখুন

ইংরেজি শব্দগুলো একত্রে মনে রাখা কষ্টকর। তাই বড়বড় শব্দগুলোকে ভেঙে ভেঙে ছোট শব্দে পরিণত করে সেগুলো মনে রাখুন। ছোট আকারে মনে রাখতে পারলে এরপর একসাথে করে বড় শব্দটি সাজিয়ে ফেলা সম্ভব হবে। যেমন, Lieutenant বানানটি মুখস্ত করা কষ্টকর৷ তবে, আপনি যদি এই শব্দটিকে Lie, u, ten, ant এভাবে ভাগ করে নেন তাহলে এই ছোট ছোট ভাগগুলো মুখস্ত করা তেমন কষ্টকর নয়৷ আর এই চারটি ভাগ মুখস্থ হয়ে গেলে একসাথে মনে করা খুব একটা অসুবিধাজনক হবে না। এভাবে আপনি বড় বড় শব্দগুলোকে সহজ ভাবে ভাগ করে নিলে সহজেই ধাপে ধাপে মুখস্ত করে নিতে পারবেন।  

কনফিউজিং বানান গুলো একত্রে আলাদাভাবে শিখুন

ইংরেজি ভাষায় কাছাকাছি বানানের শব্দ অনেক। কিন্তু সেসব শব্দগুলোর অর্থ সম্পূর্ণ আলাদা৷ আপনি যদি এই শব্দগুলোকে আলাদা আলাদা ভাবে পড়েন তবে বারবার গুলিয়ে ফেলবেন। যেমন, Principle শব্দের অর্থ নীতি আর Principal শব্দের অর্থ প্রধান শিক্ষক। যদি আলাদাভাবে শিখতে চান তাহলে এই দুটো শব্দে গুলিয়ে ফেলার সম্ভাবনা ব্যাপক। কিন্তু, যদি এই দুটোকে একসাথে শিখেন এবং ভালোভাবে এই দুটো শব্দের ঠিক কোথায় পার্থক্য সেটা বুঝে পড়ার চেষ্টা করেন, তাহলে এ সংক্রান্ত ভুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যাবে। আপনি এধরনের যত কাছাকাছি বানানের শব্দ আছে, সেগুলোকে পরপর লিখবেন। এভাবে আলাদা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকার চাইতে একসাথে পরপর থাকলে এই শব্দগুলোর বানান সহজে শেখা সম্ভব হবে। 

পাজল গেম

ওয়ার্ড এর পাজল গেম বাচ্চাদের বেশ প্রিয় একটা খেলা। তবে এই খেলাটি আপনার ইংরেজি বানানের দক্ষতা বৃদ্ধিতে বেশ সাহায্য করতে পারে। এই পাজল গেম টিতে মূলত বিভিন্ন বর্ণ ছড়িয়ে থাকে, সেগুলোকে সাজিয়ে শুদ্ধ বানানে একটি শব্দ বানাতে হয়। শব্দ বানাতে হলে অবশ্যই বানান জানা থাকতে হবে। কিন্তু এভাবে পাজল গেমের মাধ্যমে শুদ্ধ বানানে শব্দ সাজানোর এই খেলাটা খেলার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে মজার সাথে বানান শেখা। এভাবে খেলার ছলে যদি কোনো বানান আপনি আত্মঃস্থ করেন, তা আপনি সহজে ভুলবেন না। 

বারবার লিখে প্রাকটিস করুন

 

শব্দার্থ কিংবা শব্দের বানান, দুটি জিনিস শিখতে গিয়েই সকলে যে ভুলটা করে তা হলো শুধুমাত্র বই এর দিকে তাকিয়ে মুখস্থ করতে চায়। কিন্তু এভাবে মনে মনে মুখস্থ করলে তা বেশিদিন মনে থাকেনা। যেকোনো শব্দের বানান মুখস্থ রাখতে চাইলে, অবশ্যই তা লিখে প্রাকটিস করবেন। আদর্শ নিয়ম হচ্ছে, যেই শব্দের বানানটি আপনি মুখস্থ করতে চাচ্ছেন, তা খাতায় বারবার লিখবেন আর মুখে সেটি উচ্চারণ করবেন৷ এর ফলে, লেখার জন্য আপনার হাত ব্যবহৃত হচ্ছে, চোখ দিয়ে আপনি তা দেখছেন, মুখ দিয়ে তা উচ্চারণ করছেন এবং কান দিয়ে তা শুনছেন। এত গুলো ইন্দ্রিয় জড়িত থাকার কারনে আপনার ব্রেন শব্দের বানান টিকে আরো ভালোভাবে গ্রহণ করে এবং দীর্ঘদিনের জন্য এই বানান আপনার মনে থাকবে। যেই শব্দের বানান আপনার কঠিন মনে হবে, খাতা কলম নিয়ে বসে এভাবে মুখে উচ্চার‍ণ করতে করতে ২০-২৫ বার লিখে ফেলুন। এতে অবশ্যই শব্দের বানানটি আপনার আত্মঃস্থ হয়ে যাবে।

পোস্টার ট্রিক

আপনি নিশ্চয়ই আপনার এলাকার মুদি দোকানগুলোর নাম জানেন। আপনি কি কখনো সেই নাম গুলো জোর করে মুখস্থ করার চেষ্টা করেছিলেন? কোনোরকম জোর করা ছাড়াও আপনার এই নাম গুলো মুখস্থ কারন এত এত বড় বড় ব্যানারে লেখা শব্দগুলো প্রতিদিন ই আপনার চোখে পড়ে। ফলে সাবকনশান মাইন্ডের মাধ্যমে এই তথ্য আপনার স্মৃতিতে জমা হয়ে যায়। ইংরেজি বানান শিখতে ঠিক একই কাজটি করা যেতে পারে। আপনি কোনো বড় হোয়াইটবোর্ড বা সাদা আর্টপেপারের পোস্ট ঘরের কোনো জায়গায় লাগাতে পারেন। এমন জায়গায় লাগাবেন যেখানে আপনার সারাদিন নজর পড়ে। সেখানে যদি আপনি কঠিন সব ইংরেজি বানান গুলো যা আপনার মুখস্থ রাখতে কষ্ট হয় সেগুলো বড় করে লিখে রাখেন, এগুলো বারবার আপনার চোখে পড়বেন। এভাবে ঠিক যেভাবে দোকানের নামগুলো আপনার অবচেতন মনের মাধ্যমে মুখস্থ হয়ে গিয়েছে, সেভাবেই বারবার এই পোস্টারে চোখ পড়ার কারনে আর রিভিশন হতে থাকার কারনে এই বানানগুলোও আপনার স্মৃতিতে গেঁথে যাবে। এভাবে শিখলে আপনার কঠিন বানান মুখস্থে কষ্ট কম হবে৷ পাশাপাশি যেহেতু সাবকনসাস মাইন্ড এটি স্মৃতির গভীরে গেঁথে দেয় তাই তা আর সহজে ভুলবেন না৷ পশ্চিমা দেশগুলোতে গনিতের কঠিন সূত্র, রাসায়নিক বিক্রিয়া ইত্যাদি মনে রাখার জন্য ও ছাত্ররা এই কৌশল গ্রহণ করে থাকে। 

ফেজড রিভিশন

ইংরেজি শব্দের অর্থ জানলে ইংরেজি বানান শেখাটা খুব একটা দূরহ নয়। যেটা প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় তা হচ্ছে বানানগুলোকে মনে রাখা। মানুষ এর মস্তিষ্ক সবসময় সবকিছু মনে করে রাখে না, এর মনে রাখার একটি সময়সীমা আছে। একটি নির্দিষ্ট সময় পর মস্তিষ্ক তার স্মৃতিকে মুছে দেয় বা ঝাপসা করে দেয়, যার ফলে আমরা বানান বা অন্যান্য ব্যাপার ভুলে যাই। এই ভুলে যাওয়া প্রতিরোধ করতে, ঠিক যত সময় পর থেকে আপনার মনে হয় যে আপনি বানান ভুলতে শুরু করেন, সে সময়টা পরপর রিভিশন দিতে হবে। একেই বলে ফেজড রিভিশন। অর্থাৎ মনে করুন, আপনি কোনো শব্দ শেখার পর ২ দিন পর থেকে আপনার সেই বানানটি মনে থাকেনা। তাই প্রথমে ১.৫ দিন পর একবার রিভিশন দিবেন, এরপর ৫-৬ দিন পর আবার, এরপর হয়ত একমাস পরপর একবার করে রিভিশন দিবেন। রিভিশন এ অত সময় লাগবেনা যেহেতু একটি ফেজড রিভিশনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন, শুধু একবার চোখ বুলালেই সবকিছু আপনার স্মৃতিতে আবারো চাঙা হয়ে যাবে এবং আরো অনেকদিন মনে রাখতে পারবেন। এভাবে আস্তে আস্তে অনেকদিন পরপর একবার রিভিশন দিয়ে নিলেই দেখা যাবে বানানটি আপনি আর ভুলে যাচ্ছেন না। এভাবে দীর্ঘদিন ইংরেজিবানান গুলো নির্ভুলভাবে আপনি শিখতে ও মনে রাখতে পারবেন। 

 

শেষ কথা

ইংরেজি বানান শিখতে ও মনে রাখতে একাডেমিক জীবন ও কর্মজীবন উভয় ক্ষেত্রেই অসুবিধার সম্মুখীন হয়ে থাকেন অনেকেই। আজকের এ লেখাতে তাই ইংরেজি বানান শেখার বেশ কয়েকটি কার্যকর হ্যাক্স নিয়ে আলোচনা করা হয়েছি। লেখাটির মাধ্যমে আপনি কঠিন ইংরেজি বানান মুখস্থ করার ও তা মনে রাখার উপায় পাবেন ও উপকৃত হবেন, এমনটাই কামনা করছি।

অনবরত জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী

ইংরেজি শব্দের শুদ্ধ বানান কোনটি তা কিভাবে বুঝবো?

যদি একই শব্দের নানা জায়গায় নানা রকম বানান দেখে আপনার মধ্যে কনফিউশন তৈরি হয়, তবে যেকোনো ইংরেজি বানান অক্সফোর্ডের ডিকশনারি তে অবশ্যই থাকবে। অনলাইনে সার্চ দিয়ে বা অফলাইনে অক্সফোর্ড ডিকশনারি থেকে খুঁজে শুদ্ধ বানানটি নিয়ে নিশ্চিত হতে পারেন।

একই শব্দের বানান দুইরকম হয়ে থাকে কেন?

এটি মূলত ব্রিটিশ আর আমেরিকান ইংলিশ এর পার্থক্যের কারণে হয়ে থাকে। চিন্তার কোনো কারন নেই, দুটোই ঠিক আছে। যেমন, রং এর ইংরেজি হিসেবে ব্রিটিশ ইংলিশে লেখা হয় Colour আর আমেরিকান ইংলিশে লেখা হয় Color. দুটো বানানই ঠিক আছে।

ইংরেজি বানান শুদ্ধ হওয়া কতটা প্রয়োজনীয়?

অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। স্পোকেন ইংলিশে অর্থাৎ মুখে ইংরেজি বলার সময় অনেক ইনফরমাল বা নিয়মের বাইরে ভাষা ব্যবহারের সুযোগ থাকলেও, লিখিত ভাবে কখনো ইনফরমাল ভাষা ব্যবহারের সুযোগ নেই। তাছাড়া, কর্মজীবনে কোনো শব্দের বানান ভুল হলে সেটির কোনো অন্য অর্থ বের হলে তা ব্যাপক ক্ষতি ও বিব্রতকর পরিস্থিতির কারন হতে পারে। তাই প্রফেশনাল কাজে এবং একাডেমিক লাইফে শুদ্ধ বানান চর্চা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। 

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *