ভাষা আন্দোলন রচনা

ভাষা আন্দোলন রচনা

প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, আমাদের কথিত আজকের বাংলা ভাষা অর্জিত হয়েছে তীব্র আন্দোলনের মাধ্যমে। সেই আন্দোলনের রয়েছে একটি বিস্তীর্ণ ইতিহাস। আমাদের বাংলা পাঠ্যসূচির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হলো- ভাষা আন্দোলন রচনা। তাই ভাষার জন্য ঘটে যাওয়া আন্দোলনের ঐতিহাসিক তথ্য নিয়ে নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন অনেক পয়েন্টসহ ভাষা আন্দোলন রচনা নিচে দেওয়া হলো:

ভূমিকা

‘মাগো,,,ওরা বলে,

সবার কথা কেড়ে নেবে,,,

তোমার কোলে শুয়ে

গল্প শুনতে দেবে না।

বলো, মা, তাই কি হয়?

– আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ

১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষাকে নিয়ে ঘটে যায় এক ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন। বাঙালি জাতি স্বাধীন হওয়ার বীজ রোপিত হয় ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে। ভাষা নিয়ে আন্দোলনের সূচনা ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগের পর শুরু হলেও এর চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে ১৯৫২ সালে। একুশে ফেব্রুয়ারিতে সালাম, বরকত, জব্বার, রফিক, শফিউর প্রমুখের বাংলা ভাষাপ্রেমে আত্মত্যাগের মাধ্যমে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পায় বাংলা ভাষা। বাঙালি জাতির জন্য এই আন্দোলন স্বাধীনতার প্রথম ছোঁয়া। এর মধ্য দিয়ে ই জাগ্রত হয় বাঙালি জাতীয়তা বোধ, পরাধীনতার শিকল ছিড়ে বেরিয়ে আসে বাঙালি জাতি। 

৫২ এর ভাষা আন্দোলন কি?

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষাকে ঘিরে সংগঠিত আন্দোলনই ৫২ এর ভাষা আন্দোলন। ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্ব প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই পশ্চিম পাকিস্তান সরকার পূর্ব পাকিস্তানের অধিকার কেড়ে নিতে থাকে। বাঙালি জাতিকে সকল সুবিধা থেকে বঞ্চিত রাখায় তারা ক্ষুব্ধ হতে থাকে। তবে বাঙালির জন্য সবচেয়ে বড় আঘাত বাংলা ভাষা মুছে ফেলতে চাইলে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবীতে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ব্যাপী আন্দোলন সংঘটিত হয়। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষাকে নিয়ে সেই আন্দোলনে শহীদদের বুকের রক্ত দিয়ে বাঙালি ভাষা স্বাধীনতা পায়, তাই একে ৫২ এর ভাষা আন্দোলন বলা হয়।

ভাষা আন্দোলনের সূচনা

বাংলা ভাষার আন্দোলন ১৯৫২ সালের হলেও এর সূচনা হয় ১৯৪৭ সাল থেকেই। ১৮৫৭-১৯৪৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ১৯০ বছর ধরেই বাঙালির প্রতি ব্রিটিশদের অত্যাচার অবিচার চলছিল। অবশেষে ১৯৪৭ সালে উপনিবেশিক শক্তি ব্রিটিশ ভারতবর্ষ ত্যাগ করে। অতঃপর দ্বিজাতি তত্ত্ব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ভারত ও পাকিস্তান দেশ বিভাজন হলে পাকিস্তানের দুইটি অংশ পূর্ব পাকিস্তান (বাংলাদেশ) ও পশ্চিম পাকিস্তান থাকে। এ সময় পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যা ৬ কোটি ৯০ লাখ এর মধ্যে ৪ কোটি ৪০ লাখ পূর্ব পাকিস্তানে বসবাসকারী হলেও রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা থাকে মাত্র ২ কোটি ৫০ লাখ নাগরিকের পশ্চিম পাকিস্তানেই। তখন থেকেই পূর্ব পাকিস্তানকে সরকারি সুযোগ সুবিধা, উন্নয়ন, শিক্ষা ব্যবস্থা, ক্ষমতা প্রদান ইত্যাদি সবকিছু থেকেই বঞ্চিত রাখা হয়। অবশেষে বাংলা ভাষার প্রতি তাদের বদনজর পড়লে উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা করে। তখন থেকেই সূচনা হয় ভাষা আন্দোলনের।

বাংলা ভাষা নিয়ে প্রাথমিক বৈষম্য

ভারতবর্ষ ভেঙে ভারত ও পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকেই প্রায় ২ হাজার কিলোমিটারের দূরত্বের ব্যবধানে অবস্থিত পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক, ভৌগোলিক ও ভাষাগত সহ অনেক মৌলিক পার্থক্য ছিল। উর্দু ভাষায় ফার্সি, আরবি এবং তুর্কি ভাষার প্রভাব থাকায় এই ভাষাকে ভারতবর্ষের মুসলমানদের ইসলামী সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ মনে করা হতো। অন্যদিকে বাংলাতে ইসলামী সংস্কৃতির প্রভাব নেই বলে বিবেচনা করা। ভারতবর্ষের স্বাধীন হওয়ার পূর্বেই ১৯৪৭ সালে মুসলিম লীগের মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ উর্দুকে ভারতের মুসলিমদের লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা মনোনয়নের প্রস্তাব রাখেন। যা বাঙালির নেতা শেরেবাংলা একে ফজলুল হক প্রত্যাখ্যান এবং বিরোধিতা করেন। পাকিস্তানের বড় বড় রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী এবং তৎকালীন মুসলিম লীগের মোহাজেরগন উর্দুকে প্রাধান্য দিয়ে বাংলাকে অপসংস্কৃতি ভাবতো। এভাবেই ভাষা নিয়ে বৈষম্য চলতে থাকে ভাষা আন্দোলনের দিকে।

উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা

১৯৪৭ সালে একটি জাতীয় শিক্ষা সম্মেলনের অনুষ্ঠানে করাচীতে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা হিসেবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষার প্রস্তাব করা হয়। সাথেসাথেই সম্মেলনে উপস্থিত বাঙালি প্রতিবাদ জানায়। তবে এই প্রতিবাদকে উপেক্ষা করে পাকিস্তান সরকারের নির্দেশে উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে থাকে যা বাংলা ভাষাপ্রেমীরা মেনে নিতে পারেনি এবং বাঙ্গালীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

নানান দেশে নানান ভাষা,,,

বিনে স্বদেশীয় ভাসে পূরে কি আশা? 

কত নদী সরোবর, কি বা ফল চাতকীর,,,

ধরাজল বিনে কভু ঘুচে কি তৃষা?

– রামনিধি গুপ্ত

বাংলা বর্ণমালা মুছে ফেলার প্রয়াস

বাংলার বর্ণমালা মুছে ফেলে বাংলাকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টায় সচেষ্ট ছিল পাকিস্তান পার্লামেন্টের অধিকাংশ সদস্য। উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার পর পাকিস্তান পাবলিক সার্ভিস কমিশন বাংলা ভাষাকে তাদের অনুমোদিত শিক্ষা ব্যবস্থার বিষয় তালিকা থেকে বাদ দেয়। পাকিস্তান পার্লামেন্টের সাংবিধানিক কাগজপত্র, মুদ্রা, ডাকটিকেট, গণমাধ্যম থেকে বাংলা অক্ষর বাতিল করা হয়। এর ফলে বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রভাব পড়ে এবং বাঙালি জাতি ক্রমে ভাষা আন্দোলনের দিকে ধাবিত হতে থাকে।

বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি

১৯৪৮ সালের ২৩ শে ফেব্রুয়ারি পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) কুমিল্লার সন্তান ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত পাকিস্তান পার্লামেন্টে ইংরেজি ও উর্দুর পাশাপাশি বাংলায় বক্তৃতা অবদান ও সরকারি কাজে বাংলা ভাষা ব্যবহারের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। অধিকাংশ জাতি-গোষ্ঠীর ভাষা হিসেবে তিনি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানান। তার এই প্রস্তাবকে পূর্ব পাকিস্তান থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা সমর্থন করলেও তাজিম উদ্দিন খানের নেতৃত্বে থাকা মুসলিম লীগের সদস্যরা একসাথে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। খাজা নাজিম উদ্দিন ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান এর বিরোধিতা করে প্রস্তাবটি বাতিল করেন। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বিরোধিতা করলে ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। ছাত্ররা ক্লাস বর্জন, ধর্মঘট, সম্মেলন, প্রতিবাদী মিছিল চলতে থাকে।

ভাষা আন্দোলনের পুনর্জাগরণ

বাঙালি বারবার বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে দাবি জানায় এবং পাকিস্তান সরকার তা প্রত্যাখ্যান করতে থাকে। ১৯৫১ সালে ও ১৯৫২ সালের শুরুতে ভাষা নিয়ে দেশব্যাপী হাজারো আন্দোলন সংগঠিত হয়। সর্বশেষ ১৯৫২ সালের ২৭ শে জানুয়ারি খাজা নাজিমুদ্দিন পুনরায় ঘোষণা করেন “পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু”। বাঙালি আর চুপ থাকতে পারল না। ৪ ফেব্রুয়ারি ধর্মঘট এবং ২১ শেষ ফেব্রুয়ারি হরতাল পালনের সিদ্ধান্ত নেয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটি। তবে ২০ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান সরকার সারাদেশে আন্দোলন, মিছিল, সমাবেশ নিষিদ্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করেন। ভাষার আন্দোলনে আসে নতুন মোড়।

স্মৃতির মিনার ভেঙেছে তোমার? 

ভয় কি বন্ধু,,, আমরা এখনো চারকোটি পরিবার খাড়া রয়েছি তো ! 

যে-ভিত কখনো কোনো রাজন্য পারেনি ভাঙতে হীরের মুকুট নীল,,, 

পরোয়ানা খোলা তলোয়ার খুরের ঝটকা ধুলায় চূর্ণ।

– আলাউদ্দিন আল আজাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির ভাষা আন্দোলন

১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি ঢাকা শহরের স্কুল-কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো ছাত্র সকাল ৯ টায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমবেত হয়। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন প্রাঙ্গণের আমতলায় ঐতিহাসিক ছাত্রসভা হয়। ছাত্ররা দলে দলে “রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই” স্লোগান দিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। বেলা ১১:১৫ মিনিটে পুনরায় মিছিল বের করতে চাইলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পুলিশকে গ্যাস নিক্ষেপ বন্ধ করতে অনুরোধ জানায় এবং ছাত্রদের ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে বলেন। বেরিয়ে আসার সময় পুলিশ বেশ কয়েকজন ছাত্রকে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের অভিযোগে আটক করে ফলে ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এই মিছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে গেলে পুলিশ ১৪৪ দ্বারা ভাগের অভিযোগে আন্দোলনকারীদের উপর গুলি বর্ষন করে। এ সময় সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ অন্যান্য শহীদের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়।

ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ

দুপুর বেলার অক্ত

বৃষ্টি নামে, বৃষ্টি কোথায়?

বরকতেরই রক্ত।

– আল মাহমুদ

একুশে ফেব্রুয়ারি পরবর্তী আন্দোলন

ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে বাঙালি জাতি বিদ্রোহের আগুনে জ্বলে ওঠে। ২২ ও ২৩ শে ফেব্রুয়ারি দেশের আপামর ছাত্রজনতা, বুদ্ধিজীবী, সাহিত্যিক, শিক্ষক, শ্রমিক ও সাধারণ জনগণ সভা-শোভাযাত্রা সহ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে হরতাল পালন করে। পুলিশের গুলিতে শফিউর রহমান শফিক শহীদ হন ২২ শে ফেব্রুয়ারি। দেশের সর্বত্রই পুলিশের নিপীড়ন চলতে থাকে। গণমাধ্যমেয় এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ চলতে থাকে তীব্রভাবে। শহীদদের স্মৃতিকে জাগ্রত রাখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজের হোস্টেল প্রাঙ্গনে ২৩ শে ফেব্রুয়ারি বিকাল থেকে ২৪ শে ফেব্রুয়ারি ভোররাত পর্যন্ত কাজ করে নির্মাণ করেন ভাষা আন্দোলন ইতিহাসের প্রথম শহীদ মিনার। 

ভাষা আন্দোলনের অর্জন

ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার প্রতি সোচ্চার করে। বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের ১৯৫৪ সালে গঠিত হয় যুক্তফ্রন্ট যা একই বছরে বিপুল ভোটে মুসলিম লীগকে পরাজিত করে। তীব্র গণআন্দোলন চলতে থাকলে ১৯৫৪ সালের ৭ই মে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বাংলা সাহিত্যের উন্নয়নের জন্য ১৯৫৫ সালে গঠিত হয় “বাংলা একাডেমি”। ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর ইউনেস্কো বাংলা ভাষার আন্দোলনের এই ঐতিহাসিক দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের’ মর্যাদা প্রদান করেন। আজও পর্যন্ত জাতিসংঘের অধীনে থাকা দেশগুলোতে ভাষা দিবসের সম্মান অর্জন করেছে বাংলা ভাষা আন্দোলন।

মোদের গর্ব মোদের আশা,,,

আ মরি,,, বাংলা ভাষা।

– অতুল্প্রসাদ সেন

ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য

বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রথম অর্জন ভাষা আন্দোলন। ভাষার এই আন্দোলন বাঙালি জাতিকে নিজের অধিকার আদায়ের ব্যাপারে সোচ্চার করেছে। এই আন্দোলনের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে বাঙালি জাতির ঐক্যবদ্ধতার লুপ্ত শক্তি। সকলের মনে এসেছিল কঠোর আত্মবিশ্বাস। বাঙ্গালীদের মনে জাগ্রত হয়েছে প্রাণঢালা দেশপ্রেম। বাঙালি সংস্কৃতিকে বিশ্বের বুকে তুলে ধরতে বাংলা ভাষাগঠিত আন্দোলনের প্রভাব ছিল অপরিসীম।

স্বাধীনতা যুদ্ধে ভাষা আন্দোলনের প্রভাব

বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের আত্মবিশ্বাস অর্জনের পর বাঙালি জাতি প্রায় সকল আন্দোলনেই জয়ী হয়েছে। ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬ দফা, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালের নির্বাচন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের প্রেরণা যুগিয়েছিল ভাষা আন্দোলন।

বাংলা ভাষার অপব্যবহার

যে ভাষার জন্য জীবন বিলিয়ে দিয়েছিলো,

বাংলার ধামাল ছেলেরা,,,

আজ মুমূর্ষু সেই ভাষা,,,ভিনদেশী ভাষার চর্চায়

মেতেছে বাংলা।

তীব্র ত্যাগ স্বীকার ও কয়েক বছরের আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলা ভাষা অর্জিত হলেও দেশের ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাজনৈতিক পর্যায়ে অপব্যবহার হচ্ছে বাংলা ভাষার। সংসদীয় ভাবেও বাংলাকে পূর্ণ মর্যাদা না দিয়ে দেশকে বোঝানো হচ্ছে ইংরেজির গুরুত্ব। বিভিন্ন পর্যায়ে তুচ্ছজ্ঞান করা হচ্ছে মিষ্টি-মধুর বাংলার শব্দভাণ্ডার। পাঠ্য শিক্ষায় ততটা গুরুত্বারোপ করা হয় না বাংলা ব্যাকরণ নিয়েও। আজও বাংলা পাচ্ছেনা তার সঠিক মর্যাদা।

উপসংহার

বাংলাদেশের মানুষের ‘বাঙালি জাতি’ নাম অর্জনের সংগ্রাম ছিল ভাষা আন্দোলন। বাংলা মুখের বুলি আদায়ের জন্য বীর ভাষা শহীদেরা করে গেছেন আত্মদান। তবে বর্তমান দেশে বাংলা ভাষার অপব্যবহার হচ্ছে। ভাষা শহীদদের ত্যাগের স্বার্থকতা তখনই অর্জিত হবে যখন বাংলা ভাষা তার পূর্ণ মর্যাদা পাবে। তাই সকলকে জানাই স্বদেশ এবং মাতৃভাষার প্রতি সম্মান জানানোর আহ্বান।

3 Comments

  1. আবু হুরাইরা

    জাযাকাল্লাহ!এই প্রবন্ধ পেয়ে খুব উপনীত হয়েছি!

  2. hridoybinmortaza@gmail.com

    খুব ভালো Very Very Nice

  3. অনসূয়া সৃজিতা সাহা

    আপনাদের এই রচনাটি পেয়ে আমি খুবই উপকৃত হয়েছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *